ভারতীয় কোম্পানি আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বকেয়া নিয়ে সরকারের টানাপড়েন চলছে। বকেয়া পরিশোধ না করায় কোম্পানিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটি থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আদানির সঙ্গে বিপুল অঙ্কের টাকা বকেয়া নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শীতের চাহিদার কথা উল্লেখ করে আদানি থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানির প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি সম্প্রতি একটি ঘুষ প্রকল্পে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তিনি। তবে বকেয়া বিলের কারণে ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামানো হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আদানি সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় পরবর্তীতে তাদের থেকে সরবরাহ অর্ধেকে নামানো হয়েছে। এছাড়া বকেয়া পরিশোধে পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারপার্সন মো. রেজাউল করিম বলেন, তারা আমাদের সরবরাহ বন্ধ করায় আমরা হতবাক ও ক্ষুব্ধ হয়েছি। শীতের চাহিদা এখন কম, তাই আমরা তাদের সরবরাহ কমানোর কথা জানিয়েছি।
আদানির সঙ্গে ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে ২৫ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডে ২ বিলিয়ন ডলারের এ কেন্দ্রে দুটি ইউনিট রয়েছে। যার প্রতিটির সক্ষমতা প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট।
রয়টার্স জানিয়েছে, নভেম্বর মাসে প্লান্টটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪১ দশমিক ৮২ শতাংশে নেমেছে। যা চলতি বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত ১ নভেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটির একটি ইউনিট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
বিপিডিবির দুটি সূত্র জানিয়েছে, গত শীতে আদানি থেকে প্রতি মাসে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনেছিল বাংলাদেশ। এ বছর আবার কবে এটি স্বাভাবিক করা হবে তা বোর্ডের কাছে জানতে চেয়েছে আদানি। তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো উত্তর পায়নি তারা।
আদানি পাওয়ারের একজন মুখপাত্র বলেন,বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। তবে বকেয়া বৃদ্ধি একটি উল্লেখযোগ্য উদ্বেগের বিষয় হয়েছে দাঁড়িয়েছে। কেননা এটি প্ল্যান্টের কার্যক্রমকে টেকসই করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিপিডিবি এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে ক্রমাগত কথা বলছি। তারা আমাদের বকেয়া দ্রুত পরিশোধের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
বিপিডিবি চেয়ারপার্সন মো. রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশের কাছে আদানি গ্রুপের ৬৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে। এরমধ্যে গত মাসে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন ডলার ও অক্টোবর মাসে প্রায় ৯৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।