যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্মগ্রহণ করলেও সয়ংক্রিয়ভাবে দেশটির নাগরিকত্ব প্রাপ্তির আইন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
প্রস্তাবিত নির্বাহী আদেশের একটি খসড়া ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের অফিসিয়াল প্রচারণা সাইটে পোস্ট করা হয়েছে।
অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব প্রাপ্তির জন্য ওই শিশুর বাবা-মা বা তাদের যেকোনো একজনের নাগরিক হওয়া বা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসের অনুমোদন থাকা জরুরি। অর্থাৎ বাবা-মায়ের অন্তত একজনকে গ্রিন কার্ডধারী হতে হবে।
আগামী ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন যথাক্রমে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জে ডি ভ্যান্স। আর ওই দিন থেকেই এই নির্দেশনা কার্যকর হবে।
জে ডি ভ্যান্সের প্রচারণা সাইটে এমনটাই বলা হয়েছে।
এদিকে এমন নিদের্শনার খবরে শঙ্কায় পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১০ লাখ ভারতীয়।
নির্বাহী আদেশের পর এটি আইন হিসেবে পাস হলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ভারতীয়দের মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় গুঁড়েবালি পড়বে।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক থিংক ট্যাংক ক্যাটো ইনস্টিটিউটের ইমিগ্রেশন স্টাডিজের পরিচালক ডেভিড জে বিয়ারের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২৩ সালের মার্চে নাগাদ আমেরিকার অভিবাসন প্রক্রিয়ার কর্মসংস্থানভিত্তিক ‘গ্রিন কার্ডের’ অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা ভারতীয় সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়েছে। যদি মৃত্যু এবং বার্ধক্যের মতো কারণগুলো বিবেচনা করা হয়, তাহলে একটি গ্রিন কার্ডের জন্য একজন ভারতীয়কে অপেক্ষা করতে হবে ৫৪ বছর। আর এসব কারণ বিবেচনা না করলে এ অপেক্ষা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৩৪ বছর!
এর ফলে চার লাখেরও বেশি ভারতীয় তাদের কার্ড পাওয়ার আগেই মারা যাবেন এবং এটি ভারতীয় পরিবারের এক লাখেরও বেশি শিশুকে প্রভাবিত করবে যখন তাদের বয়স হয়ে যাবে ২১ বছর। কারণ সেসব ভারতীয় ২১ বছর পূর্ণ হওয়ার পর গ্রিন কার্ডের তালিকা থেকে বাদ পড়বে।
গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চের বিশ্লেষণ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৮ লাখ ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান আছে। যাদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ বা ১৬ লাখ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছে।
ট্রাম্পের নয়া নীতি অনুযায়ী, তারা কেউই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ তাদের বাবা-মা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন বা তাদের গ্রিনকার্ড নেই।
বর্তমানে আমেরিকার নাগরিকত্ব পেতে হলে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। অবশ্যই কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে আমেরিকার গ্রিনকার্ডধারী হতে হবে। তিন বছর ধরে মার্কিন নাগরিক এমন ব্যক্তির সঙ্গে কমপক্ষে তিন বছর বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ থেকে একত্রে বসবাস করার কাগজপত্র থাকতে হবে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস