বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে সভাপতি পদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার মনোনীত অন্যূন ৯ম গ্রেডে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে একজন প্রতিনিধির কথা বলা হয়েছে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন বিষয়ে গত ২০ আগস্টের জারি করা প্রজ্ঞাপনের (ক) অনুচ্ছেদের শেষাংশের ‘উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে; এবং শব্দগুলো নিম্নোক্ত শব্দাবলি দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হলো।
প্রতিস্থাপিত শব্দাবলি: (ক) … উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার/উপজেলা পর্যায়ে অন্যূন ৯ম গ্রেডে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মনোনীত প্রতিনিধিকে, এবং।
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইয়েদ এ.জেড. মোরশেদ আলী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) অ্যাডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট বোর্ডগুলোকে দেয়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি, খ্যাতিমান সমাজসেবক, জনপ্রতিনিধি অথবা কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের মধ্য থেকে তিন জনের একটি তালিকাসহ অন্যান্য সদস্যদের মনোনয়ন গ্রহণপূর্বক সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের কাছে পাঠাবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা, ২০২৪’ এর প্রবিধি ৬৪ এর আওতায় অ্যাডহক কমিটি গঠনপূর্বক এ অ্যাডহক কমিটি কর্তৃক আগামী ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে নিয়মিত কমিটি গঠন করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডসমূহকে অনুরোধ করা হলো।
(১) কমিটিতে যেভাবে হবে
(ক) সভাপতি: শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক মনোনীত;
(খ) শিক্ষক প্রতিনিধি: জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজন শিক্ষক
(গ) অভিভাবক প্রতিনিধি: জেলা সদরের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কর্তৃক এবং উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক মনোনীত একজন অভিভাবক এবং
(ঘ) সদস্য-সচিব: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান (পদাধিকার বলে)।
(২) অ্যাডহক কমিটি গঠনের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে এবং অনুমতি প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে কমিটি গঠনপূর্বক অনুমোদনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করতে হবে।
(৩) সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলোচনাক্রমে, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি, খ্যাতিমান সমাজসেবক, জনপ্রতিনিধি অথবা কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের মধ্য থেকে তিন জনের একটি তালিকাসহ অন্যান্য সদস্যদের মনোনয়ন গ্রহণপূর্বক সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে পাঠাতে হবে।
(৪) শিক্ষা বোর্ড, সভাপতি মনোনয়নের জন্য প্রবিধান (৩) এর অধীন প্রস্তাবিত ৩ (তিন) জনের মধ্য থেকে একজনকে অথবা, পরিস্থিতি বিবেচনায়, ভিন্ন কোনো ব্যক্তিকে সভাপতি মনোনীত করতে পারেন এবং অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করিবে।
(৫) অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ হবে এটি অনুমোদিত হওয়ার তারিখ থেকে ৬ মাস।
(৬) অ্যাডহক কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমত, ম্যানেজিং কমিটি গঠনে ব্যর্থ হলে, পুনরায় অ্যাডহক কমিটি গঠন করা যাবে, তবে তা ২ (দুই) বারের অধিক নয়।
(৭) অ্যাডহক কমিটি যৌক্তিক কারণ ব্যতিরেকে গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি গঠনে ব্যর্থ হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ব্যতীত উক্ত কমিটির সভাপতি ও সদস্যমণ্ডলী ন্যূনতম পরবর্তী ২ (দুই) বছরের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো কমিটির যে কোনো পদের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবে।
(৮) অ্যাডহক কমিটিতে কোনো ব্যক্তি পরপর দুবারের অধিক সভাপতি, শিক্ষক প্রতিনিধি বা অভিভাবক সদস্য মনোনীত হতে পারবেন না।
(৯) অ্যাডহক কমিটির সভাপতি বা কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে বা পদত্যাগ করলে ৭ (সাত) দিনের মধ্যে শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করতে হবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য নতুন সভাপতি বা সদস্য মনোনয়নের অনুমোদন গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ শিক্ষা বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠাতে হবে।
(১০) শিক্ষা বোর্ড, উপ-প্রবিধান (৯) এর অধীন প্রস্তাব প্রাপ্তির পর, অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব অনুমোদন করবে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পনতের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২০ অগাস্ট সব বেসরকারি স্কুল ও কলেজের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিদের অপসারণ করে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের নতুন দায়িত্ব পেয়েছিলেন বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ইউএনওরা। তবে সভাপতি অপসারণ হলে কমিটির অন্য সদস্যরা নিজ নিজ পদে বহাল ছিলেন।
Facebook Comments Box