আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বেশ কয়েক জন উপাচার্যের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে যার অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি।
চার বছরের জন্য ২০২১ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর দে। দুর্নীতির নানা অভিযোগ মাথায় নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারপতনের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১৪ আগস্ট পদত্যাগ করেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় স্বজনপ্রীতি ছাড়াও অর্থের বিনিময়ে বহু শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছেন তিনি। ঠিকাদারের জামানত করা টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে রুপালি ব্যাংকে স্থানান্তর করে প্রতি কোটিতে ৫০ হাজার টাকা করে কমিশন নিতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক রাজধানীর ধানমন্ডি ও উত্তরায় একাধিক ফ্ল্যাট, শেরপুরে ডুপ্লেক্স বাড়িসহ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে অভিযোগে।
দুদকে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে, বিএসএমএমইউ-এর সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে একশ’ কোটি টাকার বেশি অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য অধ্যাপক শিরীন আখতার। পাঁচ বছরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নিয়োগে প্রতিটি পদে ১৬ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নিতেন বলে অভিযোগ এসেছে।
দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ নূরের বিরুদ্ধে।
ড. মোঃ শাহজাহান সাজু, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটি এবং মঈদুল ইসলাম, সাবেক মহাপরিচালক, দুদক, তারা মনে করেন, রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বৈ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দিলে এমন দুর্নীতির অভিযোগ কমে আসবে।
দুর্নীতির প্রমাণ পেয়ে এর আগে দুদক মামলা করেছে, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম শেখ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তারসহ আরো বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে।