সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন। দুদিন পর তার লাশ দেশে নিয়ে আসা হয় এবং বনানী কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দলীয় ও পারিবারিকভাবে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আজ সকাল ১০টায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের নেতারা বনানীতে তার কবর জিয়ারত ও পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন। বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থিতি মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বাদ আসর লন্ডন বিএনপির উদ্যোগে বৃক্ষল্যান্ড জামে মসজিদ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে আরাফাত রহমান কোকো এমন সময়ে মারা যান যখন তাঁর মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে গুলশানের কার্যালয়ে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে অবরুদ্ধ ছিলেন। সরকার তাঁর বাসার সামনে বালুর ট্রাক দিয়ে এবং বাসার গেটে তালা লাগিয়ে রাখে। ছেলের মৃত্যুর সংবাদে অচেতন হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। বারবার মূর্ছা যান তিনি। বিদেশে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করলেও আদরের ছোট ছেলে এভাবে মারা যাবেন, এমনটি খালেদা জিয়ার কল্পনায়ও ছিল না। পাশে থাকা পরিবারের স্বজনরা সান্ত্বনা দিতে গেলেও তাঁকে থামানো যায়নি। ছেলের মৃত্যুতেও তিনি জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আরাফাত রহমান কোকোর বাবা জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি, মা খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী এবং বড় ভাই তারেক রহমান বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলেও আরাফাত রহমান কোকো ছিলেন অনেকটা পর্দার আড়ালে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এড়িয়ে খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সামাজিক কর্মকাণ্ডেই সময় ব্যয় করতেন তিনি।
সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেনানিবাস মইনুল রোডের বাসা থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে গ্রেফতার হন আরাফাত রহমান কোকো। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার উদ্দেশে থাইল্যান্ড যান কোকো। সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়ায় চলে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন। মরহুমের স্ত্রী শামিলা রহমান সিঁথি ও দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান বর্তমানে লন্ডনে থাকেন।