banglanews
Tuesday , 18 February 2025 | [bangla_date]
  1. আইন-আদালত
  2. আপনার জন্য
  3. আলোচিত সংবাদ
  4. একটু থামুন
  5. খেলা
  6. চাকরি
  7. জীবনযাপন
  8. জেলা সংবাদ
  9. ডাক্তার আছেন
  10. দুর্নীতি
  11. ধর্ম ও জীবন
  12. নির্বাচিত কলাম
  13. প্রবাস জীবন
  14. প্রযুক্তি
  15. বাণিজ্য

তিস্তা প্রকল্পে পাল্টে যাবে উত্তরের দুই কোটি মানুষের জীবনমান

প্রতিবেদক
নিউজ ডেক্স
February 18, 2025 11:42 am
তিস্তা

দীর্ঘদিনেও ভারতের সঙ্গে পানিবণ্টন নিয়ে জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় তিস্তা নদীতে একটি বহুমুখী তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মহাপরিকল্পনা নেয় বাংলাদেশ। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে একদিকে যেমন ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না, তেমনি পুরো এলাকায় ব্যাপক পরিবর্তনের পাশাপাশি বদলে যাবে উত্তরের পাঁচ জেলার দুই কোটিরও বেশি মানুষের জীবনযাত্রা। তিস্তা নিয়ে সরকারের এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে পাঁচ জেলার বাসিন্দাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।

ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারে উত্তরাঞ্চলের বিশাল জনপদে মরুকরণ ঠেকাতে এবং সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের এমন একটি প্রকল্প খোদ আত্মরক্ষামূলক হলেও প্রকল্পটি ভূ-রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে তিস্তা নদীর এ প্রকল্প নিয়ে ভারত এবং চীন পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে। এ নিয়ে চীন ব্যাপক আগ্রহী হলেও ভারত অনেক বেশি আতঙ্কে রয়েছে।

শুরু থেকেই এ প্রকল্পে সহায়তায় আগ্রহী চীন, বিগত সরকার চীনকে গ্রিন সিগন্যালও দিয়েছিল, কিন্তু আপত্তি জানায় ভারত। পরে ভারতকেই এ প্রকল্পের কাজ দিতে উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এতে বিস্মিত হয় চীন, তখন ঢাকা বেইজিং সম্পর্কে কিছুটা টানাপড়েনও তৈরি হয়। ২০২৪ সালের ৮ জুলাই শেখ হাসিনা বেইজিং সফরে গেলেও একদিন আগেই তাকে সফর শেষ করে ফিরে আসতে হয়। তখন ভারত ছিল বেশ খোশমেজাজে। কিন্তু কয়েকদিনের ব্যবধানে জুলাই বিপ্লবে হাসিনা পালিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে। এরপর ঝুলে যায় তিস্তা সিদ্ধান্ত। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ভারতের আপত্তির কারণেই চীনের সঙ্গে এ প্রকল্প নিয়ে এগোতে পারেনি বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চীন এরই মধ্যে একটি প্রাথমিক প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশকে। চীনের প্রস্তাবিত ‘তিস্তা প্রকল্প’ বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার মানুষের ভাগ্য। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। নদীর গভীরতা প্রায় ১০ মিটার বাড়বে, বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি প্লাবিত হবে না কোনো জনপদ। সারা বছর নৌ চলাচলের মতো পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। এতে ১০৮ কিলোমিটার নদী খনন, নদীর দুপাড়ে ১৭৩ কিলোমিটার তীর রক্ষা, চর খনন, নদীর দুই ধারে স্যাটেলাইট শহর নির্মাণ, বালু সরিয়ে কৃষিজমি উদ্ধার ও ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা এবং প্রতি বছরে ২০ হাজার কোটি টাকার ফসল উৎপাদন। নৌ-বন্দর এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দুই পাড়ে থানা, কোস্টগার্ড ও সেনাবাহিনীর জন্য ক্যাম্পের ব্যবস্থার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে প্রকল্পটিতে।

ফলে এ প্রকল্প নিয়ে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার মানুষেরও রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। গতকাল সোমবারও লালমনিরহাটে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে লাখো মানুষ জড়ো হন তিস্তার তীরে। সদর উপজেলার তিস্তা রেল ও সড়ক সেতুর মধ্যবর্তী স্থানে তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত জনতার সমাবেশে দুদিনের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারিও ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে কুড়িগ্রামে রাজারহাটে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমাবেশ হয়।

এদিকে গত ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফরে অনেক বিষয়ের সঙ্গে তিস্তা ইস্যুটি সুরাহার কথা থাকলেও তা হয়নি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, তিস্তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এই ইস্যুতে আলোচনা হতে হলে আগে সমঝোতা হতে হবে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক খুবই হৃদ্যতার। সেই দিক থেকে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মার্চে বেইজিং সফরকালে ড. ইউনুস চীনা প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টির অগ্রগতি হতে পারে। সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনও বলেছেন, বাংলাদেশের দিক থেকে প্রকল্পের প্রস্তাব পেলে চীন সহযোগিতা দেবে। এক্ষেত্রে চীন তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

এ প্রকল্প নিয়ে ভারত এবং চীন পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এতদিন ভারতের আপত্তির কারণেই চীনের সঙ্গে এ প্রকল্প নিয়ে এগোতে পারেনি বাংলাদেশ। জুলাই বিপ্লবের পর সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।

তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, তিস্তা নিয়ে চীনের আগ্রহ মূলত কৌশলগত। এ প্রকল্পকে চীন ভূ-রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে। এ প্রকল্পে চীনের আগ্রহী হয়ে ওঠার সবচেয়ে বড় কারণ তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ- বিআরআই’ প্রজেক্ট। এ প্রকল্পের মাধ্যমে চীন এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকা মহাদেশকে একই সুতায় গাঁথতে চাইছে। চীনের বিআরআই প্রকল্পের আওতাধীন বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর।

ভারতের গবেষণা সংস্থা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক অনুসুয়া বসু রায় চৌধুরীর মতে, চীন প্রথম যেভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ করতে চেয়েছিল সেই পরিস্থিতি বদলে গেছে। অন্য কোনোভাবে এই করিডোরগুলো বা এই ধরনের কানেক্টিভিটি প্ল্যানগুলো চরিতার্থ করা যায় কি না সেটা চীনের উদ্দেশ্য তো থাকবেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারত যেহেতু বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করছে না, সেজন্য এর বিকল্প একটি সমাধান খুঁজছে বাংলাদেশ। এজন্য তিস্তা প্রকল্প সামনে এনেছিল বাংলাদেশ, এ প্রকল্প চীনের ভাবনা থেকে আসেনি। তিনি বলেন, তিস্তা প্রকল্পের সঙ্গে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কার নয়। যারা প্রবলভাবে ভারত কিংবা চীনবিরোধী তারা এসব কথা বলছে।

তবে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের আগ্রহকে ভারত বরাবরই সন্দেহের চোখে দেখে এসেছে। ভারত মনে করে, চীন তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে ভারতকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে চায়।

এ প্রসঙ্গে অনুসুয়া বসু রায় চৌধুরী বলেন, তিস্তা প্রকল্পের যে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে সেটি অস্বীকার করা যাবে না। ভূ-কৌশলগতভাবে গুরুত্ব বহন করে এমন সব প্রকল্প নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চীন অতিরিক্ত আগ্রহ প্রকাশ করে। চীন চায় তাদের উপস্থিতি জোরালো করতে। তা ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জন্য তিস্তা নদীর পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ এ প্রকল্প নিয়ে ভারতের আপত্তির বেশ কিছু কারণের কথা উল্লেখ করেন। তার মতে, ভারত এই প্রকল্পকে স্বাগত জানালে এখানে জড়িত হওয়ার বাধ্যবাধকতা এবং বিনিয়োগের প্রশ্ন উঠতে পারে। ফলে প্রকল্পটি ঝুলিয়ে রাখা ভালো। সেক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশের ওপর চাপ বজায় রাখতে পারে। এ ছাড়া তিস্তা ইস্যু সমাধান হয়ে গেলে বাংলাদেশের ওপর ভারতের যে প্রভাব, সেটা আর থাকবে না। অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তখন আর ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকবে না। ফলে সেখানে চীনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরির পাশাপাশি ভারতবিরোধী মনোভাব আরো প্রবল হবে।

গবেষক অনুসুয়া বসু রায় চৌধুরী বলেন, যে জায়গাটিতে চীন তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাইছে, সেটি শুধু সীমান্তের কাছাকাছি নয়, ভারতের স্পর্শকাতর এলাকার খুবই কাছাকাছি। তাই বাংলাদেশের এ প্রকল্পটি নিয়ে ভারত খুবই উদ্বিগ্ন।

Facebook Comments Box

সর্বশেষ - খেলা

আপনার জন্য নির্বাচিত

উপদেষ্টা হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরোধিতা করিনি: ফারুকী

নিয়মের ফায়দা লুটছে স্বাস্থ্য মাফিয়া

গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: তারেক রহমান

অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে সাতক্ষীরা সীমান্তে যুবক আটক

শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আওয়ামী লীগের আমলে ঘরে ঘরে ডেভিল তৈরি হয়েছে : শামা ওবায়েদ

আওয়ামী লীগের আমলে ঘরে ঘরে ডেভিল তৈরি হয়েছে : শামা ওবায়েদ

বিচার বিভাগের জন্য সচিবালয়: অংশীজনদের সঙ্গে সভা করে সিদ্ধান্ত

মেট্রোর মিরপুর-১০ স্টেশন চালু করতে কত খরচ, জানালেন উপদেষ্টা

সিআইডি প্রধান মতিউরসহ পুলিশের ১৮ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বদলি

রাজধানীকে ব্যবসায়ীকে গুলি, স্বর্ণ লুট