বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে নিজ বাসা থেকে প্যাসিফিক জিন্সের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আবেদিন আল মামুনকে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হসপিটাল এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে ভিকটিমকে তার গাড়ি চালকসহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে আটককৃতরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ নয় বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এখন নির্বাহী কমিটি রয়েছে। সমন্বয়ক কোনো পদ আর নেই।
আজ শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) জনসংযোগ শাখা।
গ্রেপ্তার হওয়া অপহরণকারীরা হলেন- নাজমুল আবেদিন (২৪), নইমুল আমিন ইমন (২২), আরাফাত হোসেন ফাহিম (২২) ও রিসতি বিন ইউসুফ (২৩)। এরমধ্যে নাজমুলের বাড়ি নগরীর উত্তর কাট্টলী এলাকায়। ইমনের বাড়ি সিটি গেট, সিডিএ ১ নম্বর এলাকার বাসিন্দা ফাহিম ও রিসতি।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর কর্নেলহাট সিডিএ আবাসিকস্থ প্রভাতি এলাকার বাসা থেকে আবেদিন আল মামুনকে অপহরণ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধির পরিচয়ে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে তাকে তার নোহা গাড়ি যোগে নগরীর পতেঙ্গা সাগরপাড় এলাকা, পাহাড়তলীর কর্নেলহাট জেন্স রোড ও আকবরশাহ্ থানার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরানো হয়। এ সময় অপহরণ হওয়া আবেদিন আল মামুনের সঙ্গে জিম্মি অবস্থায় ছিল তার গাড়িচালক জুয়েলও। গাড়িতে বিভিন্ন জায়গা ঘুরতে ঘুরতে ভিকটিমের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার লিলি বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপহরণকারীরা। তারা মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা ও ১৫ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক লিখে নেয়। পরে টাকা পেয়ে ভিকটিমকে রেখে পালিয়ে যান অপহরণকারীরা।
খবর পেয়ে পাহাড়তলী জোনের পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের যৌথ অভিযান চালিয়ে অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হসপিটালের সামনে থেকে গাড়িসহ আবেদিন আল মামুন ও তার ড্রাইভার জুয়েলকে উদ্ধার করে।
নগরীর আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভিযান চালিয়ে পৃথক পৃথক এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার নইমুল আমিন ইমনের বাসা থেকে মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া পাঁচ লাখ টাকা ও ১৫ লাখ টাকার ব্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় আরো যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।