banglanews
Sunday , 2 March 2025 | [bangla_date]
  1. আইন-আদালত
  2. আপনার জন্য
  3. আলোচিত সংবাদ
  4. একটু থামুন
  5. খেলা
  6. চাকরি
  7. জীবনযাপন
  8. জেলা সংবাদ
  9. ডাক্তার আছেন
  10. দুর্নীতি
  11. ধর্ম ও জীবন
  12. নির্বাচিত কলাম
  13. প্রবাস জীবন
  14. প্রযুক্তি
  15. বাণিজ্য

কমছে গ্যাসের উৎপাদন, গভীর হচ্ছে সংকট

প্রতিবেদক
নিউজ ডেক্স
March 2, 2025 10:17 am

এক বছরে গ্যাসের উৎপাদন কমে গেছে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। প্রতিদিন এক হাজার ৩ মিলিয়ন ঘনফুটের ঘাটতি নিয়ে ধুঁকছে গ্যাস খাত। উদ্বেগ বাড়ছে জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে। দৈনিক চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে দেশীয় উৎপাদন ও আমদানি থেকে মিলছে দুই হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। তীব্র গ্যাস সংকটে শিল্প খাত মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

বাসা-বাড়িতে চুলা জ্বলছে না। চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন রাঁধুনিরা। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ভ্রান্ত নীতি ও দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে অবহেলা গোটা খাতকে নাজুক অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে।

প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে। দেশে আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলনযোগ্য ২৯ দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাসের ২৩ টিসিএফের মতো উত্তোলন করা হয়েছে। নতুন গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত না হলে আগামী দশ বছরের মধ্যে মজুত শেষ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এ খাতের কর্মকর্তারা।

সামনের সেচ ও গরমের মৌসুমে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে প্রয়োজনীয় গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেল আমদানি করা যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি ও ৪০ হাজার কোটি টাকার দেনা নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ওই সময়ে বিদ্যুৎ সংকটও তীব্র হবে, এমন আশঙ্কা করছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিজস্ব উৎপাদন বন্ধ রেখে বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে অতিমাত্রার আমদানিনির্ভরতা দেশকে জ্বালানি ঝুঁকিতে ফেলেছে। গত বছর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের কয়লা আমদানি করতে হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সচল রাখতে এবার তিন বিলিয়ন ডলারের কয়লা আমদানি করতে হবে। কয়লা সংকটের কারণে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে গভীর সংকট দেখছেন জ্বালানি বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাসহ এ খাতের বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বিগত সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের লুণ্ঠনমূলক কর্মকাণ্ডের দায় ও বোঝা সামলাতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার হিমশিম খাচ্ছে। ওই সময়ে দেশের পুরো জ্বালানি খাতটি তুলে দেওয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত লুটেরা ব্যবসায়ী গ্রুপের হাতে। দেশে প্রাকৃতিক জ্বালানির অপার সম্ভাবনা থাকলেও আওয়ামী লীগের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের সময় দেশে প্রয়োজনীয় নতুন কূপ খনন করা হয়নি। অফসোর (গভীর সমুদ্রভাগ) ও অনসোরের (স্থলভাগ) ব্লকগুলোতে নতুন কূপ খনন, পুরোনো কূপগুলোর উন্নয়ন করে গ্যাস উত্তোলনে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সরকারের জন্য কঠিন হবে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অন্তর্বর্তী সরকারের সমন্বয়হীনতা দেখছেন তারা। তাদের মতে, গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর দুর্নীতি ও সিস্টেম লস কমিয়ে আনতে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।

দ্রুত কমছে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত ও উৎপাদন

হাইড্রোকার্বন ইউনিটের দেওয়া তথ্যমতে, দেশে মোট গ্যাসের মজুত ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুটের (টিসিএফ) মতো। এর মধ্যে উত্তোলনযোগ্য মজুতের পরিমাণ ২৮ দশমিক ৬২ টিসিএফ। গত জানুয়ারি পর্যন্ত ২৩ দশমিক ১২ টিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। চাহিদা ও উত্তোলনের বিপরীতে জাতীয় গ্রিডে নতুন গ্যাস যোগ না হওয়ায় মজুত দ্রুত কমে আসছে। কিছু কিছু গ্যাসক্ষেত্রে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেলেও নানা জটিলতায় তা আশানুরূপভাবে গ্রিডে যোগ হচ্ছে না। নতুন গ্যাস উত্তোলন না হলে আগামী ১০ থেকে ১১ বছরের মধ্যে মজুত শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তবে জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কিছু কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে এবং সীমিত আকারে তা জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। যদিও পরিসংখ্যানে এখনো তা আসেনি। কারণ, গত ১৬ বছরে গ্যাসের মজুত নিয়ে কোনো সমীক্ষা চালানো হয়নি। ফলে এ বিষয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, দেশে দৈনিক প্রায় চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে নিজস্ব উৎপাদন ও আমদানি করা এলএনজি থেকে দুই হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। প্রতিদিন ঘাটতি থাকছে প্রায় এক হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। এ ঘাটতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। এতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

পেট্রোবাংলার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি সবগুলো গ্যাসক্ষেত্র থেকে এক হাজার ৯১১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় গ্রিডে দেওয়া হয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি তা কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৭০ মিলিয়ন ঘনফুটে। ১৫ দিনের ব্যবধানে গ্যাসের উৎপাদন কমেছে ৪১ মিলিয়ন ঘনফুট।

হাইড্রোকার্বন ইউনিটের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শুরুতে হবিগঞ্জের বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের প্রাথমিক মজুত ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৩৮৩ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ), যার মধ্যে উত্তোলনযোগ্য মজুত ছিল পাঁচ হাজার ৭৫৫ বিসিএফ। ইতোমধ্যেই ছয় হাজারের বেশি বিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে বিবিয়ানা থেকে। তবে উন্নয়নের ফলে এখানে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুত কিছুটা বাড়ছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ গ্যাসক্ষেত্রসহ এই অঞ্চলের তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন। শেভরনের অপর দুটি গ্যাসক্ষেত্রের মজুতও এখন শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে হাইড্রোকার্বন ইউনিট।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স), বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ও সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড (এসজিএফএল) পরিচালিত গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস উৎপাদনও কমে এসেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে আবিষ্কৃত ২৯টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২০টি থেকে মজুতকৃত ২৯ দশমিক ৭৮ টিসিএফ গ্যাসের ২০ দশমিক ৩৩ টিসিএফ উত্তোলন শেষ হয়েছে।

সংকটের মূলে এলএনজি আমদানিনির্ভরতা

বিগত সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে দেশে নতুন করে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে উচ্চমূল্যের তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে বেশি আগ্রহ দেখায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘাটতি চাহিদা মেটাতে নিজেদের সার্বভৌম সম্পদ উত্তোলনের ব্যবস্থা না করে আমদানির দিকে ঝুঁকে পড়ায় দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে অর্থনীতি ও বাণিজ্য খাত।

২০১৭ সালের আগ পর্যন্ত দেশে কোনো গ্যাস আমদানি করতে হয়নি। ২০১৮ সাল থেকে ঘাটতি পূরণে শুরু হয় এলএনজি আমদানি। গত সাত বছরে জ্বালানি আমদানি করতে গিয়ে পেট্রোবাংলা এক লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করে এখন লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশের অফশোর ও অনশোরে নতুন কূপ খনের পরামর্শ দিলেও সরকার এলএনজি আমদানিতেই বেশি আগ্রহ দেখায়। বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছ থেকে ২০১২ সালে এবং ভারতের কাছ থেকে ২০১৪ সালে বঙ্গোপসাগরের অংশ বুঝে নিলেও সেখানে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও মিয়ানমার তাদের সমুদ্র এলাকায় গ্যাস পেয়েছে। বাংলাদেশ সেখানে অনুসন্ধানের উদ্যোগ না নিয়ে এলএনজি আমদানিতেই বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে দেশে নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার না করে আমদানির দিকে ঝুঁকে পড়েন তিনি।

বর্তমান জ্বালানি সংকটের জন্য উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানিকে দায়ী করে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দেশে উৎপাদিত স্বল্পমূল্যের প্রাকৃতিক গ্যাসের বিকল্প হিসেবে উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানি করতে গিয়ে মূলত দেশের জ্বালানি খাতকে একটি টালমাটাল অবস্থায় নিয়ে গেছে। এখন অর্থের অভাবে আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার অর্থের জোগান হলেও টার্মিনালের ক্যাপাসিটির কারণে তা খালাস করে জাতীয় গ্রিডে দেওয়া সম্ভব হবে না। বর্তমানে এলএনজি সরবরাহে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। এ দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে দৈনিক সাত থেকে আটশ’ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি খালাস করা যায়। নতুন টার্মিনাল স্থাপন না করা পর্যন্ত আমদানিও বাড়ানো যাবে না।

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে

দেশে এখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রায় আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। কয়লা আমদানির বিল বকেয়া, ডলার সংকট, এলসি ও দরপত্র জটিলতার কারণে কয়লা আমদানিতেও সংকট দেখা দিয়েছে। নিজস্ব কয়লায় চালিত বড়পুকুরিয়া কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে তিনটি ইউনিট মিলে সক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। কয়লার অভাবে দুটি ইউনিটই বন্ধ। আর একটি ইউনিট থেকে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

আমদানিকৃত কয়লাচালিত মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, বাঁশখালী এসএস বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনও প্রায় বন্ধ রয়েছে। ডলার সংকট কাটিয়ে ও বকেয়া পরিশোধ করে নতুন করে কয়লা আমদানি করে এসব কেন্দ্র চালু করার আপাতত কোনো উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না।

দ্রুত সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে বলছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা চরম বিপর্যয়ে পড়েছে। এতে জনগণের মৌলিক অধিকার বিপন্ন হওয়ার পথে। তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এনার্জি তথা বিদ্যুৎ, তরল জ্বালানি, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজি, এলপিজি এবং সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ সরবরাহে অন্যায় ও অযৌক্তিক তথা লুণ্ঠনমূলক ব্যয় হয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাসের বেশি সময় পার হলেও এক্ষেত্রে সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়ে জ্বালানি খাতের এই বিশেষজ্ঞ বলেন, জ্বালানির আমদানিনির্ভরতা দ্রুত কমিয়ে আনতে হবে। নিজস্ব জ্বালানি উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে এবং দক্ষতা বাড়াতে হবে। যদিও এর ফল পেতে কিছুটা বিলম্ব হবে। তারপরও বসে থাকার সুযোগ নেই। যেসব খাতে দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে তা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ, বিগত সরকার দেশে জ্বালানি উৎপাদনের সক্ষমতা না বাড়িয়ে প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর করেছে শুধুমাত্র লুটপাটের উদ্দেশ্যে। এ সরকারকে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

দেশের স্থলভাগ, গভীর সমুদ্র ও অগভীর সমুদ্রে দ্রুত গ্যাস অনুসন্ধানে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক এবং জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে, বিগত সরকার তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য অতি উচ্চমূল্যের এলএনজি ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। নিজস্ব জ্বালানির ব্যবস্থা না করে জাতীয় চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে গোটা খাতকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নিয়ে গেছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে এলএনজি আমদানি কমিয়ে দেশে গ্যাসের অনুসন্ধান বাড়াতে জোরদার পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি জ্বালানি দক্ষতাও বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এখন ধীরে ধীরে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যেতে হবে। আমরা তিন হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ এ খাত থেকে উৎপাদন করতে পারি। ক্যাপাসিটি চার্জ যাতে দিতে না হয়, সে পথেও সরকারকে যেতে হবে।

জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে যা বলছেন উপদেষ্টা

দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আমার দেশকে বলেন, আপনারা সবাই জানেন আমরা কী অবস্থায় দেশের দায়িত্ব নিয়েছি। ব্যাংকগুলো থেকে সব টাকা লুট করে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কী পরিমাণ অনিয়ম হয়েছে, সেটাও আপনারা জানেন। আমরা সব বিষয় নিয়েই কাজ করছি।

তিনি বলেন, জনজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত ও জনগণের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে আমরা কিছু কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে পদক্ষেপ নিতেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি একটি ভালো ফলাফল আমরা পাব।

Facebook Comments Box

সর্বশেষ - খেলা